শিলচর Sagorika Resort এ গেলাম প্রথম বার।
Sagorika Resort প্রথমবারের অভিজ্ঞতা
সাগরিকা রিসোর্টে প্রথমবারের অভিজ্ঞতা অসাধারণ ছিল। প্রকৃতির কোলে অবস্থিত এই রিসোর্টটি যেন এক টুকরো স্বর্গ, যা প্রকৃতিপ্রেমী এবং ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এক আদর্শ স্থান। শহরের কোলাহল থেকে দূরে প্রকৃতির নিভৃত স্থানে সাগরিকা রিসোর্টে প্রথমবার গিয়ে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। নানা সুন্দর জায়গা ঘুরে দেখলাম, আর সেই অভিজ্ঞতার কিছু ছবি আপনাদের সাথেও শেয়ার করেছি। এবার সেই ভ্রমণের কথা লিখে শেয়ার করছি।
রিসোর্টের প্রথম ঝলক
সাগরিকা রিসোর্টে পৌঁছানোর সাথে সাথেই প্রথম যে জিনিসটি আমাকে মুগ্ধ করেছিল তা হলো রিসোর্টের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। রিসোর্টটি এমনভাবে সাজানো, যেন প্রকৃতির মাঝে বিলাসবহুল এক আবাস। চারপাশে সবুজ গাছপালা, ফুলের বাগান, ছোট্ট পুকুর এবং উঁচু নিচু ঢেউ খেলানো জমি মিলে এক স্বর্গীয় পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। রিসোর্টের ভেতরের প্রতিটি কোণই এতটাই সুন্দর এবং যত্নসহকারে সাজানো যে কোথাও কোন ত্রুটি চোখে পড়েনি।
প্রাকৃতিক দৃশ্যপট
রিসোর্টের প্রাকৃতিক পরিবেশ যেন একে আরও মোহনীয় করে তুলেছে। রিসোর্টের আশেপাশের স্থানগুলো ভ্রমণের জন্যও বেশ আকর্ষণীয়। সেখানে কিছু জায়গা ঘুরে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। প্রথমে একটি ছোট্ট নদীর ধারে গিয়ে বসেছিলাম। নদীর পানির ধারা ছিল শান্ত এবং স্রোত এতটাই হালকা ছিল যে এর ধ্বনি যেন এক সঙ্গীতের মতো মনে হচ্ছিল। নদীর ধারে বসে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করা এক দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা।
রিসোর্টের ঘরগুলো
রিসোর্টের ঘরগুলো খুবই আরামদায়ক এবং পরিপাটি ছিল। প্রতিটি ঘরের জানালা দিয়ে বাইরের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখা যায়। ঘরগুলোর ভেতরের সাজসজ্জাও আধুনিক এবং মার্জিত ছিল। বিশেষ করে বালকনির দিকটা খুব সুন্দর ছিল, যেখানে বসে আপনি সহজেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। আমি সেখানে বসেই বেশ কিছুটা সময় কাটিয়েছি, পাখির ডাক আর হালকা বাতাসের সাথে বই পড়ার সময়টা ছিল অনন্য।
ঘুরে দেখা স্থানগুলো
রিসোর্টের ভেতরেও ঘোরার মতো অনেক জায়গা ছিল। আমি প্রথমেই ফুলের বাগানটায় গিয়েছিলাম। নানা রঙের ফুলের সৌন্দর্য আমাকে বেশ মুগ্ধ করেছে। গাছগুলোর যত্ন নেওয়ার ধরন দেখে বোঝা যাচ্ছিল যে রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ এর প্রতিটি অংশ খুব যত্ন সহকারে রক্ষণাবেক্ষণ করে। বাগানে হাঁটার সময় সবুজের মধ্যে পায়ে হেঁটে যাওয়া এক অনন্য অনুভূতি।
এরপর একটা ছোট্ট পাহাড়ি ঢালে গিয়েছিলাম, যেখান থেকে পুরো রিসোর্টের দৃশ্যটা বেশ ভালোভাবে দেখা যাচ্ছিল। পাহাড়ের ওপর থেকে সূর্যাস্ত দেখা ছিল ভ্রমণের অন্যতম সেরা মুহূর্ত। সূর্য যখন ধীরে ধীরে অস্ত যেতে থাকে, তখন আকাশের রং বদলানোর দৃশ্য সত্যিই মনোমুগ্ধকর ছিল।
খাবার এবং অন্যান্য সুবিধা
রিসোর্টের খাবারের ব্যবস্থাও চমৎকার ছিল। স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক সব ধরনের খাবারই পাওয়া যায়। আমি সেখানে স্থানীয় কিছু খাবার ট্রাই করেছিলাম এবং সত্যিই তার স্বাদ অনন্য ছিল। রিসোর্টের রেস্টুরেন্টটি এতটাই মনোরম যে সেখান থেকে খাওয়ার সময় বাইরের দৃশ্য উপভোগ করার সুযোগও ছিল।
ছবি তোলা ও শেয়ার করা
রিসোর্টের প্রতিটি জায়গা এতটাই সুন্দর ছিল যে ছবি তোলার ইচ্ছা থামানো যাচ্ছিল না। আমি বেশ কিছু ছবি তুলেছি এবং কিছু আপনাদের সাথে শেয়ারও করেছি। ছবিগুলোতে আপনি রিসোর্টের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ফুলের বাগান, ছোট্ট নদী, আর সেই পাহাড়ি ঢালের দৃশ্য দেখতে পাবেন। এসব ছবি আমার ভ্রমণের স্মৃতি হিসেবে চিরকাল থাকবে।
বন্ধুত্বপূর্ণ স্টাফ
রিসোর্টের স্টাফদের ব্যবহারও প্রশংসনীয় ছিল। তারা সবসময় হাসিমুখে ছিল এবং যেকোনো প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রস্তুত ছিল। তারা যেভাবে অতিথিদের সেবা করছিল, তা দেখে আমি সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি। তাদের আন্তরিকতা এবং আতিথেয়তা রিসোর্টের অভিজ্ঞতাকে আরও আনন্দময় করে তুলেছিল।
সার্বিক অভিজ্ঞতা
সাগরিকা রিসোর্টে প্রথমবারের অভিজ্ঞতা ছিল সত্যিই অনন্য এবং স্মরণীয়। প্রকৃতির মধ্যে এমন এক নিভৃত জায়গায় কিছু সময় কাটানো মানসিকভাবে খুবই প্রশান্তিদায়ক ছিল। রিসোর্টের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, আরামদায়ক ঘর, মজাদার খাবার, এবং অসাধারণ আতিথেয়তা সবকিছু মিলিয়ে এক অনবদ্য ভ্রমণের স্মৃতি তৈরি করেছে।
যারা প্রকৃতির মাঝে কিছুটা সময় কাটাতে চান এবং শহরের কোলাহল থেকে দূরে এক শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বিশ্রাম নিতে চান, তাদের জন্য সাগরিকা রিসোর্ট আদর্শ একটি স্থান। আমি অবশ্যই ভবিষ্যতে আবারও সেখানে যেতে চাইবো এবং নতুন অভিজ্ঞতার জন্য অপেক্ষা করবো।